শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩০ অপরাহ্ন
নিউজ ডেস্কঃ প্রথমবারের মতো দেশের তৈরি পোশাক খাতের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি হতে যাচ্ছেন মোহাম্মদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবানা হক। তিনি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র প্রয়াত আনিসুল হকের স্ত্রী। গতকাল শনিবার বিজিএমইএর নেতৃত্ব নির্বাচনে রুবানা হকের নেতৃত্বাধীন প্যানেল ‘সম্মিলিত ফোরাম’ বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছে।
রাজধানীতে বিজিএমইএ কার্যালয়ের নুরুল কাদের মিলনায়তনে গতকাল সকাল ৮টায় ভোট শুরু হয়ে চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। দ্বিবার্ষিক এই নির্বাচনে ৭৬ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানায় বিজিএমইএ। সর্বশেষ তথ্য অনুসারে সবচেয়ে বেশি ভোট (৯৮০) পেয়েছেন সম্মিলিত ফোরামের এম এ রহিম। রুবানা হক ৯৬৪ এবং আরশাদ জামাল ৯৬৩ ভোট পেয়েছেন। অন্যদিকে স্বাধীনতা পরিষদের প্রার্থীদের মধ্যে সর্বোচ্চ ভোট (৪৫৬) পেয়েছেন রফিক হাসান।
জানা যায়, মোট ভোটার সংখ্যা এক হাজার ৯৫৬। এর মধ্যে ঢাকায় এক হাজার ২০৪ এবং চট্টগ্রামে ২৮৮। গতকাল এক হাজার ৪৯২ জন ভোট দিয়েছেন।
এদিকে সকালে ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার পরপরই এজেন্ট বের করে দেওয়ার অভিযোগ করেন স্বাধীনতা পরিষদের আহ্বায়ক মো. জাহাঙ্গীর আলম। তবে নির্বাচন কমিশনের দাবি, ভোট সুষ্ঠু হয়েছে।
রুবানা হক কালের কণ্ঠকে বলেন, অত্যন্ত সুন্দর ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিয়েছেন বিজিএমইএর সদস্যরা। কেউ কেউ অসুস্থতার কারণে অক্সিজেন নিয়ে বুকে পেসমেকার বসিয়েও ভোট দিতে এসেছেন। তিনি আরো বলেন, ‘বিজিএমইএ সদস্যরা তাঁদের যে আমানত দিয়েছেন তা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করব।’
বিজিএমইএর পরিচালক পদের সংখ্যা ৩৫। তবে চট্টগ্রাম অঞ্চলে ৯ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পরিচালক নির্বাচিত হওয়ায় গতকাল শুধু ঢাকা অঞ্চলের ২৬ পরিচালক পদের জন্য ভোট হয়। ওই ২৬ পদের বিপরীতে লড়ছেন দুই প্যানেলের ৪৪ জন প্রার্থী।
নির্বাচনে বড় দুই জোট সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরাম সমঝোতার মাধ্যমে একটি প্যানেল দিয়েছে। তার বিপরীতে নতুন জোট স্বাধীনতা পরিষদ প্যানেল দেওয়ায় সংগঠনটির নেতৃত্ব নির্বাচনে ছয় বছর পর ভোট হচ্ছে। তবে স্বাধীনতা পরিষদ চট্টগ্রাম অঞ্চলে প্রার্থী না দেওয়ায় সেখানে সম্মিলিত ফোরামের ৯ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পরিচালক নির্বাচিত হন।
সম্মিলিত ফোরামের অন্য প্রার্থীরা হলেন এস এম মান্নান, ফয়সাল সামাদ, মোহাম্মদ নাছির, আসিফ ইব্রাহিম, কে এম রফিকুল ইসলাম, মো. শহীদুল হক, মশিউল আজম, ইনামুল হক খান, মাসুদ কাদের, ইকবাল হামিদ কোরাইশী, নাছির উদ্দিন, কামাল উদ্দিন, সাজ্জাদুর রহমান মৃধা, রেজওয়ান সেলিম, মুনির হোসেন, এ কে এম বদিউল আলম, মিরান আলী, মোহাম্মদ আবদুল মোমেন, মোশারফ হোসেন ঢালী, শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী, মহিউদ্দিন রুবেল, শরীফ জহির ও নজরুল ইসলাম।
চট্টগ্রাম অঞ্চলে বিজয়ী প্রার্থীরা হলেন মোহাম্মদ আব্দুস সালাম, এ এম চৌধুরী, এ এম মাহবুব চৌধুরী, এনামুল আজিজ চৌধুরী, মোহাম্মদ আতিক, খন্দকার বেলায়েত হোসেন, অঞ্জন শেখর দাশ, মোহাম্মদ মুছা ও মোহাম্মদ মেরাজ-ই-মোস্তফা।
জাহাঙ্গীর আলম ছাড়া স্বাধীনতা পরিষদের প্রার্থীরা হলেন দেলোয়ার হোসেন, হুমায়ুন রশিদ, রফিক হাসান, সাইফুল ইসলাম, শওকত হোসেন, খন্দকার ফরিদুল আকবর, জাহাঙ্গীর কবির, জাহিদ হাসান, শরিফুল আলম চৌধুরী, কাজী আবদুস সোবহান, জহিরুল ইসলাম, কাজী মাহয্যাবিন মমতাজ, মাহমুদ হোসাইন, হোসেন সাব্বির মাহমুদ, আয়েশা আক্তার, মো. ওয়ালীউল্লাহ এবং ওমর নাজিম হেকমত। রুবানা হক ২০০৬ সালে কবিতার জন্য সার্ক সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। ২০০৬ থেকে ২০১০ সালে তিনি সাউথএশিয়া টিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন। এ ছাড়া তিনি এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন-এর ট্রাস্টি মেম্বার।
রুবানা হক ও আনিসুল হক দম্পতির তিন সন্তান রয়েছে। বড় ছেলে নাভিদুল হক বোস্টনের বেন্টলি ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যবস্থাপনায় উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি মোহাম্মদী গ্রুপের পরিচালক ও দেশ এনার্জি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।